মহানন্দায় বাড়ল জলস্তর, প্লাবিত হল বহু নীচু এলাকা

Odd বাংলা ডেস্ক: ভারী বৃষ্টির জেরে মালদহের সব নদনদীতেই জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। তারমধ্যে গঙ্গা ও মহানন্দা ক্রমশ বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। গঙ্গার পাড় ভাঙ্গার পাশাপাশি মহানন্দা নদীর জল তীরবর্তী ইংলিশবাজার ও পুরাতন মালদহ শহরের একাধিক ওয়ার্ডে ঢুকতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে প্রায় ৪০০ পরিবার বন্যার কবলে পড়েছে। আগামী কয়েকদিন বৃষ্টি হতে পারে বলে আবহবিদরা জানিয়েছেন। সেক্ষেত্রে বন্যাদুর্গতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। জেলার দুই পুর শহরকে নিয়ে প্রশাসনিক মহলেও উদ্বেগ বাড়ছে। এব্যাপারে মালদহের অতিরিক্ত জেলাশাসক (বিপর্যয় মোকাবিলা) মৃদুল হালদার বলেন, গঙ্গা এবং ফুলহার নদী বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। তবে তা এখনও চূড়ান্ত বিপদসীমা পার করেনি। মহানন্দার জলস্তর বাড়লেও তা এখনও বিপদসীমা ছুঁতে পারেনি। আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি। প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার দুই পুর শহরের মধ্যে পুরাতন মালদহে মহানন্দার জল বেশি ঢোকে।

 ওই শহরের বেশ কিছু ওয়ার্ড মহানন্দা নদীর সঙ্গে একই সমতলে অবস্থান করছে। তুলনায় ইংলিশবাজার শহরে কিছুটা উঁচুতে রয়েছে। তবে দুই শহরেই মহানন্দা নদী সংলগ্ন এলাকায় সরকারি জায়গায় অনেকে বাস করেন। বিভিন্ন সময়ে তাঁরা ঝুপড়ি তৈরি করে থেকে গিয়েছেন। অন্যান্য জায়গা থেকে উঠে এসে তাঁরা নদীর জায়গায় বাসা বেঁধেছেন। ফলে নদীর জল বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওইসব ঝুপড়ি ডুবে যায়। অনেকে আবার নদী বক্ষে পাকা বাড়িও তৈরি করে নিয়েছেন। সেখানেও জল ঢুকে যায়। ২০১৯ সালে মালদহে ভারী বৃষ্টি হয়। ওইসময় নদীর জল দুই শহরে ঢোকে। একাধিক ওয়ার্ড প্লাবিত হয়। প্রশাসনকে বেশ কয়েকটি ত্রাণ শিবির খুলতে হয়। সেবারও পুজোর মুখে বন্যা হয়। এবারও দুর্গাপুজোর আগে প্লাবনের আশঙ্কায় তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা প্রমাদ গুনতে শুরু করেছেন। এব্যাপারে ইংলিশবাজার পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর প্রধান সুমালা আগরওয়াল বলেন, মহানন্দার জলের তলায় কিছু বাড়ি চলে গিয়েছে। বাসিন্দাদের উদ্ধার করে স্কুল সহ অন্যান্য উঁচু জায়গায় আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। পুরকর্মী এবং প্রাক্তন কাউন্সিলাররা দুর্গতদের সাহায্য করছেন। নতুন করে কোনও এলাকা প্লাবিত হচ্ছে কিনা, সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে।  

এদিকে মহানন্দার জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় পুরাতন মালদহ শহরের একাধিক ওয়ার্ডের অসংরক্ষিত এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জল বেড়ে যাওয়ায় অনেকে ঘর ছাড়তে শুরু করেছেন।  শহরের ৮,৯ এবং ২০ নম্বর ওয়ার্ডের অসংরক্ষিত এলাকায় পুরোপুরি জল ঢুকে গিয়েছে।  আর কিছুটা জলস্তর বৃদ্ধি পেলেই  বিপদসীমা পার করে  মহানন্দা নদীর জল  সংরক্ষিত এলাকায়  ঢুকতে শুরু করবে। স্বাভাবিকভাবেই ফের  বানভাসি হওয়ার আশঙ্কায় প্রহর গুনছেন শহরের বাসিন্দারা। গত দুদিন ধরে মহানন্দা নদী ফুলে ফেঁপে উঠছে। তাতে গড়ে ১৭ সেন্টিমিটার ওপরে জলস্তর বেড়ে গিয়েছে। সেচ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৮ আগস্ট যেখানে ওই নদীর জলস্তর ছিল ২০.৩৩ মিটার তা হঠাত্ করে বেড়ে গিয়ে সোমবার সকাল থেকে ২০.৪৯ মিটার উপর দিয়ে বইছে মহানন্দা। মালদহ সহ উত্তরবঙ্গের পাহাড় এলাকায়  বৃষ্টি হওয়ায় আপার ক্যাচমেন্টের জল মহানন্দার নিম্ন অববাহিকায় নদীতে নেমে এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে বলে নদী বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। এ বিষয়ে পুরাতন মালদহ পুরসভার প্রশাসক বৈশিষ্ট্য ত্রিবেদী বলেন, মহানন্দার জল বাড়ছে। এটি উদ্বেগের বিষয়। বেশকিছু অসংরক্ষিত এলাকায় জল ঢুকেছে।  তবে পরিস্থিতি বেগতিক হলে জেলাশাসকের সাথে বৈঠক করে  মোকাবিলা করা হবে। 

No comments:

Powered by Blogger.