ভাঙনের ছোবলে ভূতনি, আতঙ্কে ঘুম হারিয়েছে চরবাসীরা



মালদা Update ডেস্ক: গঙ্গানদী গর্বে তলিয় গেল কয়েকশো মিটার বাঁধ সংলগ্ন জমি। অতঙ্কে মালদার ভুতনি চরে লাক্ষাধিত মানুষ ।  

 শুক্রবার বিকাল থেকে  তীব্র ভাঙ্গনের ঘটনা সামনে আসতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের মধ্যে। বিশাল আয়তনের ভাঙন হওয়ায় বাঁধ ভেঙে গ্রামে জল ঢুকে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।  ঘটনার তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মালদা জেলার  মানিকচক ব্লকের হিরানন্দপুর অঞ্চলের কোশিঘাট  এলাকায়।যদিও তৎপরতার সাথে শেষ দপ্তরের তরফে ভাঙ্গন রোধ করতে জরুরী কালীন  পরিস্থিতিতে বালির বস্তা এবং বাঁশ  দিয়ে কাজ শুরু করা হয়েছে। 

এই ভাবে ভাঙ্গন রোধের কাজ করে নদী  ভাঙ্গন থামা সম্ভব নয় অভিযোগ  এলাকাবাসীর। ব্যাপক হারে ভাঙ্গন হওয়ায় দুশ্চিন্তায় ঘুম উড়েছে এলাকাবাসীর।

হিরানন্দপুর অঞ্চলের কেশবপুর ও কোশিঘাট  এলাকায় বয়ে গিয়েছে গঙ্গা নদী। বরাবরই এই অঞ্চল এলাকায়  ভাঙ্গনের ঘটনা সামনে আসে প্রতিবছরই। সেদিকে লক্ষ্য রেখে সেচ দপ্তরের তরফে প্রায় 7 কোটি টাকা ব্যয়ে ভাঙ্গন রোধের কাজ হয়েছে   মাসখানেক আগে  রাজকুমার টোলা ও টেনুটোলা গ্রামে ।   গত কাল সন্ধায় টেনুটোলার   পার্শ্ববর্তী   ব্যাপক হারে ভাঙ্গন হয়।ইতিমধ্যে নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে প্রায়  ৫০০  মিটার  বাঁধ সংলগ্ন জমি এবং বড়ো বড়ো গাছ তলিয়ে গিয়েছে ।    আর এই ঘটনা সামনে আসতে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন।  সঠিক  সময় সঠিকভাবে কাজ হলে এই ভাঙ্গন হতো না বলে মনে করছে  এলাকাবাসী।তবে হঠাৎই এই ভাঙ্গনের ফলে বাঁধের গোড়ায় এসে দাঁড়িয়েছে নদী।এই পরিস্থিতিতে ভাঙ্গনরোধে বাঁধ আটকাতে যুদ্ধকালীন তৎপরতা সাথে কাজ শুরু করেছে সেচ দপ্তর।বালির বস্তা এবং বাঁশ  দিয়ে ভাঙা অংশে ফেলে ভাঙ্গন রোধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।তবে এভাবে যে ভাঙ্গন রোধ করা সম্ভব নয়।তা বিগত দিনের ভয়ঙ্কর গঙ্গার রুদ্ররূপের সাক্ষী এলাকাবাসী। বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কায় নদী-তীরবর্তী পরিবারগুলি বাড়ির সামগ্রী ধীরে ধীরে অন্যত্রে সরিয়ে ফেলতে শুরু করে দিয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা সুদাম মন্ডল ,বিশ্বদেব মন্ডল,শ্রীকান্ত মন্ডল ,নকুল মন্ডলরা  জানান,প্রতি বছরই এই সমস্ত এলাকাজুড়ে ভাঙ্গনের ঘটনা সামনে আসে। আর সেই ভাঙ্গন রোধের কাজ চলছিল হঠাৎই বিশাল অংশ নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়ায় বাঁধের গোড়ায় পৌঁছেছে নদী। গত কালে থেকে এবার কোশিঘাট এলাকতে ব্যাপক হারে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে ।  
ভাঙ্গনের তীব্রতা বাড়লে পথ থেকে সর্বস্ব গ্রাস করবে নদী। আমরা চাই দুর্নীতি মুক্ত কাজ করে   ,প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করুক আমাদের রক্ষা করুক।


ভাঙ্গনের ঘটনা জানতে পেরে শনিবারয় সকাল থেকে দফায় দফায় প্রশাসনিক কর্তারা ওই এলাকার জনপ্রতিনিধি ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন।স্থানীয় জেলা পরিষদের সদস্য ডলি রানী মন্ডল সহ সেচ দপ্তরের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে তদারকি করেছেন। সকাল থেকেই বস্তা দিয়ে ভাঙ্গন রোধের কাজ চলছে।
পাশাপাশি মানিকচক কংগ্রেসের বিধায়ক মোত্তাকিন আলম এদিন সকালে ভাঙ্গন পরিদর্শন করে তীব্র আক্রমণ করেছে রাজ্যের তৃণমূল সরকার এবং কেন্দ্রের বিজেপি সরকার কে।  
এপ্রসঙ্গে সেচ দপ্তরের আধিকারিক অসীম রায় জানিয়েছেন,হঠাৎ করে ভাঙ্গনের ঘটনা সামনে এসেছে।নদীর জলস্তর বৃদ্ধির ফলে গভীরতা বেড়েছে তাই ভাঙ্গন হয়েছে। যদিও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।বালি বস্তা এবং বাঁল  দিয়ে ভাঙ্গন রোধ করার কাজ চলছে। 

এই বিষয়ে ভুতনি এলাকার  জেলা পরিষদের সদস্য ডলিরানী মন্ডল বলেন গতকাল বিকাল থেকে সেচ দপ্তরের থেকে জরুরী পর্যায়ের ভাঙ্গন রোধের কাজ শুরু করা হয়েছে । সারা রাত ধরে কাজ চলেছে ।  বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে ।  
অন্য দিকে   মানিকচকের বিধায়ক   মোত্তাকিন আলম  বলেন আমি গতকাল সন্ধ্যায় ভাঙ্গনের ঘটনার শুনেছি ।  আমি সাথে সাথে সেচ দপ্তরের   আধিকারিকদের সাথে কথা বলেছি ফোনে ।  যে ভাবে ভাঙ্গেন  হচ্ছে খুব ভয়ঙ্কর অবস্থা ।  ভুতনিত কে বাঁচানো যাবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ।   আমরা বারবার সরকারের কাছে দাবি করে এসেছি গ্রীষ্মকালে ভাঙন রোধের কাজ করার জন্য কেন সরকার বন্যার ও বর্ষার সময় ভাঙ্গন রোধ এর কাজ করছে।  রাজ্য সরকার ও কেন্দ্র সরকার খেলা মেলা করে জন সাধারণের টাকা নষ্ট করছে ।
এই প্রসঙ্গে মালদা জেলা পরিষদ সভাধিপতি গৌর চন্দ্র  মন্ডল জানাই একটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ তবুও আমরা শেষ দপ্তরের তরফ থেকে তৎপরতার সাথে ভাঙন রোধের কাজ করেছি।   ভূতনির  কোশিঘাট এলাকাতেও সেভাবেই রাত থেকে জরুরি পর্যায়ে কাজ চলছে ।   আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে ।  আর এর মাঝে কংগ্রেস নেতা মানুষর  পাশে না দাঁড়িয়ে শুধু রাজনীতি করছে।

No comments:

Powered by Blogger.